গৌড়তন্ত্র শব্দটি বৌদ্ধগ্রন্থ 'আর্যমঞ্জুশ্রীমূলকল্পে' ব্যবহৃত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে, শশাঙ্কের মৃত্যুর পর পারস্পরিক হিংসা, বিদ্বেষ ও অবিশ্বাসে গৌড়তন্ত্র বিনষ্ট হয়। এর অর্থ — শশাঙ্কের নেতৃত্বে স্বাধীন গৌড়রাষ্ট্রের যে আদর্শ গড়ে উঠেছিল, তা ‘গৌড়তন্ত্র' নামে আখ্যায়িত হয়েছে।
গৌড়তন্ত্র শব্দটি বৌদ্ধগ্রন্থ ‘আর্যমঞ্জুশ্রীমূলকল্পে’ ব্যবহৃত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে, শশাঙ্কের মৃত্যুর পর পারস্পরিক হিংসা, বিদ্বেষ ও অবিশ্বাসে গৌড়তন্ত্র বিনষ্ট হয়। এর অর্থ — শশাঙ্কের নেতৃত্বে স্বাধীন গৌড়রাষ্ট্রের যে আদর্শ গড়ে উঠেছিল, তা ‘গৌড়তন্ত্র’ নামে আখ্যায়িত হয়েছে।
শশাঙ্কই প্রথম বাঙালি রাজা যিনি উত্তর ভারতের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন এবং আর্যাবর্তে প্রথম বাঙালি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। এই নীতি অনুসরণ করে পরবর্তীকালে পাল রাজারা উত্তর-পূর্ব ভারতে এক বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তােলেন। তাই অনেকে শশাঙ্ককে পাল রাজাদের পূর্বসূরি বলে অভিহিত করেন।
শশাঙ্কই প্রথম বাঙালি রাজা যিনি উত্তর ভারতের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন এবং আর্যাবর্তে প্রথম বাঙালি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। এই নীতি অনুসরণ করে পরবর্তীকালে পাল রাজারা উত্তর-পূর্ব ভারতে এক বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তােলেন। তাই অনেকে শশাঙ্ককে পাল রাজাদের পূর্বসূরি বলে অভিহিত করেন।
গুপ্তাত্তর যুগে অর্থাৎ খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ-সপ্তম শতকে গৌড় বলতে মূলত বর্তমান দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গের উত্তরাঞ্চলকে বােঝাত। বর্তমান মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বর্ধমান ও মালদহ অঞ্চল নিয়ে গৌড় রাজ্য গড়ে উঠেছিল।
গুপ্তাত্তর যুগে অর্থাৎ খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ-সপ্তম শতকে গৌড় বলতে মূলত বর্তমান দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গের উত্তরাঞ্চলকে বােঝাত। বর্তমান মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বর্ধমান ও মালদহ অঞ্চল নিয়ে গৌড় রাজ্য গড়ে উঠেছিল।
হরপ্পা সভ্যতা ধ্বংসের পর ভারতে যে সভ্যতার উন্মেষ হয় তার নাম বৈদিত সভ্যতা। বেদকে ভিত্তি করে এই সভ্যতা গড়ে ওঠে বলে এর নাম বৈদিক সভ্যতা। এই সভ্যতার স্রষ্টাদের আর্য বলা হয়। খাটি সংস্কৃত শব্দে আর্য কথার অর্থ হল সৎবংশজাত বা অভিজাত মানুষ। 'আর্য' বলতে অনেকে একটি জাতি বােঝেন। প্রাচীন ভারত ও ইরানে আর্য কথাRead more
হরপ্পা সভ্যতা ধ্বংসের পর ভারতে যে সভ্যতার উন্মেষ হয় তার নাম বৈদিত সভ্যতা। বেদকে ভিত্তি করে এই সভ্যতা গড়ে ওঠে বলে এর নাম বৈদিক সভ্যতা। এই সভ্যতার স্রষ্টাদের আর্য বলা হয়। খাটি সংস্কৃত শব্দে আর্য কথার অর্থ হল সৎবংশজাত বা অভিজাত মানুষ। ‘আর্য’ বলতে অনেকে একটি জাতি বােঝেন। প্রাচীন ভারত ও ইরানে আর্য কথাটি দীর্ঘকাল জাতিবাচক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। পারসিক সম্রাট প্রথম দারায়ুন (Darius I) একটি শিলালিপিতে (৪৮৬ খ্রিঃ পূঃ) নিজেকে একজন আর্য ও আর্য-বংশােদ্ভূত বলে উল্লেখ করেছেন। প্রকৃত অর্থে ‘আর্য’ কোনও জাতিবাচক শব্দ নয় — আর্য হল একটি ভাষাগত ধারণা। সংস্কৃত, ল্যাটিন, জার্মান, গ্রিক, গথিক, কেলটিক, পারসিক প্রভৃতি ভাষার মধ্যে একটি মূলগত সাদৃশ্য আছে। বলা হয় যে, একটি মূল ভাষা থেকে এই ভাষাগুলি উৎপন্ন। এই ভাষাগুলিকে একত্রে ইন্দো-ইউরােপীয় ভাষা (Indo-European languages) বলা হয়, এবং এইসব ভাষায় যারা কথা বলে তাদের আর্য বলা হয়। খ্রিস্টীয় ষােড়শ শতকের শেষদিকে (১৫৮৩-১৫৮৮ খ্রিঃ) ভারতে আগত ফিলিপ্পো সসেটি (Filippo Sassetti) নামে জনৈক ইতালীয় বণিক সংস্কৃতের সঙ্গে অন্যান্য ইউরােপীয় ভাষাসমূহের সাদৃশ্যের উল্লেখ করেন। ১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে স্যার উইলিয়াম জোনস্ ‘এশিয়ার সোসাইটি অব বেঙ্গল’ প্রদত্ত এক ভাষণে ওইসব ভাষাগুলি সাদৃশ্য দেখিয়ে বলেন যে, ওইসব ভাষাগুলির উৎস এক ও অভিন্ন। ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে জার্মান পণ্ডিত ম্যাক্সমুলার (Max Muller) বলেন, আর্য বলতে ভাষা বোঝায় — অন্য কিছু নয়।
আর্য সমস্যার সঙ্গে দুটি বিষয় সংযুক্ত: (১) আর্য শব্দটি ভাষা না জাতির পরিচায়ক এবং (২) আর্যদের আদি বাসভূমি কোথায় ছিল? এই দুটি বিষয় নিয়ে পণ্ডিত মহলে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, তা আর্য সমস্যা বলে চিহ্নিত হয়েছে।
আর্য সমস্যার সঙ্গে দুটি বিষয় সংযুক্ত: (১) আর্য শব্দটি ভাষা না জাতির পরিচায়ক এবং (২) আর্যদের আদি বাসভূমি কোথায় ছিল? এই দুটি বিষয় নিয়ে পণ্ডিত মহলে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, তা আর্য সমস্যা বলে চিহ্নিত হয়েছে।
(১) ঋগবেদে ‘হরিগুপ্পি’ যুদ্ধের উল্লেখ আছে। হরিগুপ্পি সম্ভবত হরপ্পা; (২) আর্যদেবতা ইন্দ্রকে ‘পুরন্দর' অর্থাৎ ‘পুর' বা নগর ধ্বংসকারী বলা হয়েছে; (৩) সিন্ধু সভ্যতার অবসান ও আর্যদের ভারতে আগমন সমসাময়িক ঘটনা। এসব থেকে মনে হয় যে, সিন্ধু সভ্যতা ধ্বংসকারী বৈদেশিক জাতি হল 'আর্য'।
(১) ঋগবেদে ‘হরিগুপ্পি’ যুদ্ধের উল্লেখ আছে। হরিগুপ্পি সম্ভবত হরপ্পা; (২) আর্যদেবতা ইন্দ্রকে ‘পুরন্দর’ অর্থাৎ ‘পুর’ বা নগর ধ্বংসকারী বলা হয়েছে; (৩) সিন্ধু সভ্যতার অবসান ও আর্যদের ভারতে আগমন সমসাময়িক ঘটনা। এসব থেকে মনে হয় যে, সিন্ধু সভ্যতা ধ্বংসকারী বৈদেশিক জাতি হল ‘আর্য’।
সিন্ধু সভ্যতা ধ্বংসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল পরিবেশের পরিবর্তন: (১) সিন্ধু নদের গতিপথের পরিবর্তনের ফলে বন্দর হিসাবে মহেঞ্জোদারাে তার গুরুত্ব হারায়; (২) নির্বিচারে বনাঞ্চল ধ্বংসের ফলে এখানে মরু অবস্থার সৃষ্টি হয় এবং কৃষিকার্য বিপর্যস্ত হয় এবং (৩) বারংবার বন্যা ও ভূমিকম্পের ফলে সিন্ধুর কোনােRead more
সিন্ধু সভ্যতা ধ্বংসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল পরিবেশের পরিবর্তন: (১) সিন্ধু নদের গতিপথের পরিবর্তনের ফলে বন্দর হিসাবে মহেঞ্জোদারাে তার গুরুত্ব হারায়; (২) নির্বিচারে বনাঞ্চল ধ্বংসের ফলে এখানে মরু অবস্থার সৃষ্টি হয় এবং কৃষিকার্য বিপর্যস্ত হয় এবং (৩) বারংবার বন্যা ও ভূমিকম্পের ফলে সিন্ধুর কোনাে কোনাে নগর ধ্বংস হয়ে যায়।
সিন্ধু সভ্যতা ও মেসােপটেমিয়া (সুমেরীয়) সভ্যতার মধ্যে সাদৃশ্যের প্রধান দিকগুলি হল: (১) উভয় সভ্যতাই নদীমাতৃক, (২) উভয়েই তাম্র-প্রস্তর যুগের সভ্যতা, (৩) উভয়েরই নগরবিন্যাস, পৌর সচেতনতা ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী চরিত্র একই ধরনের এবং (৪) উভয় সভ্যতাতেই মাতৃদেবীর প্রাধান্য।
সিন্ধু সভ্যতা ও মেসােপটেমিয়া (সুমেরীয়) সভ্যতার মধ্যে সাদৃশ্যের প্রধান দিকগুলি হল: (১) উভয় সভ্যতাই নদীমাতৃক, (২) উভয়েই তাম্র-প্রস্তর যুগের সভ্যতা, (৩) উভয়েরই নগরবিন্যাস, পৌর সচেতনতা ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী চরিত্র একই ধরনের এবং (৪) উভয় সভ্যতাতেই মাতৃদেবীর প্রাধান্য।
হরপ্পা সভ্যতা ও বৈদিক সভ্যতার মধ্যে মূল পার্থক্য হল: (১) হরপ্পা সভ্যতা নগরকেন্দ্রিক, কিন্তু আর্য সভ্যতা গ্রামীণ; (২) হরপ্পা সভ্যতা ছিল তামা ও ব্রোঞ্জ যুগের, কিন্তু বৈদিক সভ্যতা ছিল লৌহ যুগের; (৩) সিন্ধুবাসীরা ঘােড়ার ব্যবহার জানত না, কিন্তু আর্যদের কাছে ঘােড়া ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; (৪) হরপ্পার অRead more
হরপ্পা সভ্যতা ও বৈদিক সভ্যতার মধ্যে মূল পার্থক্য হল: (১) হরপ্পা সভ্যতা নগরকেন্দ্রিক, কিন্তু আর্য সভ্যতা গ্রামীণ; (২) হরপ্পা সভ্যতা ছিল তামা ও ব্রোঞ্জ যুগের, কিন্তু বৈদিক সভ্যতা ছিল লৌহ যুগের; (৩) সিন্ধুবাসীরা ঘােড়ার ব্যবহার জানত না, কিন্তু আর্যদের কাছে ঘােড়া ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; (৪) হরপ্পার অর্থনীতি প্রধানত ছিল শিল্পবাণিজ্য নির্ভর, কিন্তু আর্য অর্থনীতি ছিল পশুপালন ও কৃষিনির্ভর।
গৌড় তন্ত্র কাকে বলে?
siraj
গৌড়তন্ত্র শব্দটি বৌদ্ধগ্রন্থ 'আর্যমঞ্জুশ্রীমূলকল্পে' ব্যবহৃত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে, শশাঙ্কের মৃত্যুর পর পারস্পরিক হিংসা, বিদ্বেষ ও অবিশ্বাসে গৌড়তন্ত্র বিনষ্ট হয়। এর অর্থ — শশাঙ্কের নেতৃত্বে স্বাধীন গৌড়রাষ্ট্রের যে আদর্শ গড়ে উঠেছিল, তা ‘গৌড়তন্ত্র' নামে আখ্যায়িত হয়েছে।
গৌড়তন্ত্র শব্দটি বৌদ্ধগ্রন্থ ‘আর্যমঞ্জুশ্রীমূলকল্পে’ ব্যবহৃত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে, শশাঙ্কের মৃত্যুর পর পারস্পরিক হিংসা, বিদ্বেষ ও অবিশ্বাসে গৌড়তন্ত্র বিনষ্ট হয়। এর অর্থ — শশাঙ্কের নেতৃত্বে স্বাধীন গৌড়রাষ্ট্রের যে আদর্শ গড়ে উঠেছিল, তা ‘গৌড়তন্ত্র’ নামে আখ্যায়িত হয়েছে।
See lessশশাঙ্ককে পাল রাজাদের পূর্বসূরি বলা হয় কেন?
siraj
শশাঙ্কই প্রথম বাঙালি রাজা যিনি উত্তর ভারতের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন এবং আর্যাবর্তে প্রথম বাঙালি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। এই নীতি অনুসরণ করে পরবর্তীকালে পাল রাজারা উত্তর-পূর্ব ভারতে এক বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তােলেন। তাই অনেকে শশাঙ্ককে পাল রাজাদের পূর্বসূরি বলে অভিহিত করেন।
শশাঙ্কই প্রথম বাঙালি রাজা যিনি উত্তর ভারতের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন এবং আর্যাবর্তে প্রথম বাঙালি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। এই নীতি অনুসরণ করে পরবর্তীকালে পাল রাজারা উত্তর-পূর্ব ভারতে এক বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তােলেন। তাই অনেকে শশাঙ্ককে পাল রাজাদের পূর্বসূরি বলে অভিহিত করেন।
See lessবাংলার প্রথম সার্বভৌম রাজা কে ছিলেন?
siraj
বাংলার প্রথম সার্বভৌম রাজা হলেন শশাঙ্ক। তার রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ (বর্তমান মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের কাছে রাঙামাটি গ্রাম)।
বাংলার প্রথম সার্বভৌম রাজা হলেন শশাঙ্ক। তার রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ (বর্তমান মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের কাছে রাঙামাটি গ্রাম)।
See lessগৌড় রাজ্য বলতে কোন অঞ্চলকে বােঝাত?
siraj
গুপ্তাত্তর যুগে অর্থাৎ খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ-সপ্তম শতকে গৌড় বলতে মূলত বর্তমান দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গের উত্তরাঞ্চলকে বােঝাত। বর্তমান মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বর্ধমান ও মালদহ অঞ্চল নিয়ে গৌড় রাজ্য গড়ে উঠেছিল।
গুপ্তাত্তর যুগে অর্থাৎ খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ-সপ্তম শতকে গৌড় বলতে মূলত বর্তমান দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গের উত্তরাঞ্চলকে বােঝাত। বর্তমান মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বর্ধমান ও মালদহ অঞ্চল নিয়ে গৌড় রাজ্য গড়ে উঠেছিল।
See lessআর্য কারা?
siraj
হরপ্পা সভ্যতা ধ্বংসের পর ভারতে যে সভ্যতার উন্মেষ হয় তার নাম বৈদিত সভ্যতা। বেদকে ভিত্তি করে এই সভ্যতা গড়ে ওঠে বলে এর নাম বৈদিক সভ্যতা। এই সভ্যতার স্রষ্টাদের আর্য বলা হয়। খাটি সংস্কৃত শব্দে আর্য কথার অর্থ হল সৎবংশজাত বা অভিজাত মানুষ। 'আর্য' বলতে অনেকে একটি জাতি বােঝেন। প্রাচীন ভারত ও ইরানে আর্য কথাRead more
হরপ্পা সভ্যতা ধ্বংসের পর ভারতে যে সভ্যতার উন্মেষ হয় তার নাম বৈদিত সভ্যতা। বেদকে ভিত্তি করে এই সভ্যতা গড়ে ওঠে বলে এর নাম বৈদিক সভ্যতা। এই সভ্যতার স্রষ্টাদের আর্য বলা হয়। খাটি সংস্কৃত শব্দে আর্য কথার অর্থ হল সৎবংশজাত বা অভিজাত মানুষ। ‘আর্য’ বলতে অনেকে একটি জাতি বােঝেন। প্রাচীন ভারত ও ইরানে আর্য কথাটি দীর্ঘকাল জাতিবাচক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। পারসিক সম্রাট প্রথম দারায়ুন (Darius I) একটি শিলালিপিতে (৪৮৬ খ্রিঃ পূঃ) নিজেকে একজন আর্য ও আর্য-বংশােদ্ভূত বলে উল্লেখ করেছেন। প্রকৃত অর্থে ‘আর্য’ কোনও জাতিবাচক শব্দ নয় — আর্য হল একটি ভাষাগত ধারণা। সংস্কৃত, ল্যাটিন, জার্মান, গ্রিক, গথিক, কেলটিক, পারসিক প্রভৃতি ভাষার মধ্যে একটি মূলগত সাদৃশ্য আছে। বলা হয় যে, একটি মূল ভাষা থেকে এই ভাষাগুলি উৎপন্ন। এই ভাষাগুলিকে একত্রে ইন্দো-ইউরােপীয় ভাষা (Indo-European languages) বলা হয়, এবং এইসব ভাষায় যারা কথা বলে তাদের আর্য বলা হয়। খ্রিস্টীয় ষােড়শ শতকের শেষদিকে (১৫৮৩-১৫৮৮ খ্রিঃ) ভারতে আগত ফিলিপ্পো সসেটি (Filippo Sassetti) নামে জনৈক ইতালীয় বণিক সংস্কৃতের সঙ্গে অন্যান্য ইউরােপীয় ভাষাসমূহের সাদৃশ্যের উল্লেখ করেন। ১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে স্যার উইলিয়াম জোনস্ ‘এশিয়ার সোসাইটি অব বেঙ্গল’ প্রদত্ত এক ভাষণে ওইসব ভাষাগুলি সাদৃশ্য দেখিয়ে বলেন যে, ওইসব ভাষাগুলির উৎস এক ও অভিন্ন। ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে জার্মান পণ্ডিত ম্যাক্সমুলার (Max Muller) বলেন, আর্য বলতে ভাষা বোঝায় — অন্য কিছু নয়।
See lessআর্য সমস্যা কাকে বলে?
siraj
আর্য সমস্যার সঙ্গে দুটি বিষয় সংযুক্ত: (১) আর্য শব্দটি ভাষা না জাতির পরিচায়ক এবং (২) আর্যদের আদি বাসভূমি কোথায় ছিল? এই দুটি বিষয় নিয়ে পণ্ডিত মহলে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, তা আর্য সমস্যা বলে চিহ্নিত হয়েছে।
আর্য সমস্যার সঙ্গে দুটি বিষয় সংযুক্ত: (১) আর্য শব্দটি ভাষা না জাতির পরিচায়ক এবং (২) আর্যদের আদি বাসভূমি কোথায় ছিল? এই দুটি বিষয় নিয়ে পণ্ডিত মহলে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, তা আর্য সমস্যা বলে চিহ্নিত হয়েছে।
See lessবৈদিক আর্যরা সিন্ধু সভ্যতার ধ্বংসকারী—তা কীভাবে প্রমাণিত হয়?
siraj
(১) ঋগবেদে ‘হরিগুপ্পি’ যুদ্ধের উল্লেখ আছে। হরিগুপ্পি সম্ভবত হরপ্পা; (২) আর্যদেবতা ইন্দ্রকে ‘পুরন্দর' অর্থাৎ ‘পুর' বা নগর ধ্বংসকারী বলা হয়েছে; (৩) সিন্ধু সভ্যতার অবসান ও আর্যদের ভারতে আগমন সমসাময়িক ঘটনা। এসব থেকে মনে হয় যে, সিন্ধু সভ্যতা ধ্বংসকারী বৈদেশিক জাতি হল 'আর্য'।
(১) ঋগবেদে ‘হরিগুপ্পি’ যুদ্ধের উল্লেখ আছে। হরিগুপ্পি সম্ভবত হরপ্পা;
See less(২) আর্যদেবতা ইন্দ্রকে ‘পুরন্দর’ অর্থাৎ ‘পুর’ বা নগর ধ্বংসকারী বলা হয়েছে;
(৩) সিন্ধু সভ্যতার অবসান ও আর্যদের ভারতে আগমন সমসাময়িক ঘটনা। এসব থেকে মনে হয় যে, সিন্ধু সভ্যতা ধ্বংসকারী বৈদেশিক জাতি হল ‘আর্য’।
সিন্ধু সভ্যতা ধ্বংসের পরিবেশগত কারণ কী ছিল?
siraj
সিন্ধু সভ্যতা ধ্বংসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল পরিবেশের পরিবর্তন: (১) সিন্ধু নদের গতিপথের পরিবর্তনের ফলে বন্দর হিসাবে মহেঞ্জোদারাে তার গুরুত্ব হারায়; (২) নির্বিচারে বনাঞ্চল ধ্বংসের ফলে এখানে মরু অবস্থার সৃষ্টি হয় এবং কৃষিকার্য বিপর্যস্ত হয় এবং (৩) বারংবার বন্যা ও ভূমিকম্পের ফলে সিন্ধুর কোনােRead more
সিন্ধু সভ্যতা ধ্বংসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল পরিবেশের পরিবর্তন: (১) সিন্ধু নদের গতিপথের পরিবর্তনের ফলে বন্দর হিসাবে মহেঞ্জোদারাে তার গুরুত্ব হারায়; (২) নির্বিচারে বনাঞ্চল ধ্বংসের ফলে এখানে মরু অবস্থার সৃষ্টি হয় এবং কৃষিকার্য বিপর্যস্ত হয় এবং (৩) বারংবার বন্যা ও ভূমিকম্পের ফলে সিন্ধুর কোনাে কোনাে নগর ধ্বংস হয়ে যায়।
See lessসিন্ধু সভ্যতা ও মেসােপটেমিয়া সভ্যতার মধ্যে কোন কোন ক্ষেত্রে সাদৃশ্য দেখা যায়?
siraj
সিন্ধু সভ্যতা ও মেসােপটেমিয়া (সুমেরীয়) সভ্যতার মধ্যে সাদৃশ্যের প্রধান দিকগুলি হল: (১) উভয় সভ্যতাই নদীমাতৃক, (২) উভয়েই তাম্র-প্রস্তর যুগের সভ্যতা, (৩) উভয়েরই নগরবিন্যাস, পৌর সচেতনতা ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী চরিত্র একই ধরনের এবং (৪) উভয় সভ্যতাতেই মাতৃদেবীর প্রাধান্য।
সিন্ধু সভ্যতা ও মেসােপটেমিয়া (সুমেরীয়) সভ্যতার মধ্যে সাদৃশ্যের প্রধান দিকগুলি হল: (১) উভয় সভ্যতাই নদীমাতৃক, (২) উভয়েই তাম্র-প্রস্তর যুগের সভ্যতা, (৩) উভয়েরই নগরবিন্যাস, পৌর সচেতনতা ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী চরিত্র একই ধরনের এবং (৪) উভয় সভ্যতাতেই মাতৃদেবীর প্রাধান্য।
See lessহরপ্পা সভ্যতা ও বৈদিক সভ্যতার প্রধান পার্থক্য কি?
siraj
হরপ্পা সভ্যতা ও বৈদিক সভ্যতার মধ্যে মূল পার্থক্য হল: (১) হরপ্পা সভ্যতা নগরকেন্দ্রিক, কিন্তু আর্য সভ্যতা গ্রামীণ; (২) হরপ্পা সভ্যতা ছিল তামা ও ব্রোঞ্জ যুগের, কিন্তু বৈদিক সভ্যতা ছিল লৌহ যুগের; (৩) সিন্ধুবাসীরা ঘােড়ার ব্যবহার জানত না, কিন্তু আর্যদের কাছে ঘােড়া ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; (৪) হরপ্পার অRead more
হরপ্পা সভ্যতা ও বৈদিক সভ্যতার মধ্যে মূল পার্থক্য হল:
See less(১) হরপ্পা সভ্যতা নগরকেন্দ্রিক, কিন্তু আর্য সভ্যতা গ্রামীণ;
(২) হরপ্পা সভ্যতা ছিল তামা ও ব্রোঞ্জ যুগের, কিন্তু বৈদিক সভ্যতা ছিল লৌহ যুগের;
(৩) সিন্ধুবাসীরা ঘােড়ার ব্যবহার জানত না, কিন্তু আর্যদের কাছে ঘােড়া ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ;
(৪) হরপ্পার অর্থনীতি প্রধানত ছিল শিল্পবাণিজ্য নির্ভর, কিন্তু আর্য অর্থনীতি ছিল পশুপালন ও কৃষিনির্ভর।