১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দের মেইজি সংবিধান প্রণয়নে Ito Hirobumi কি ভূমিকা পালন করেন?
Sign Up to our social questions and Answers Engine to ask questions, answer people's questions, and connect with other people.
Login to our social questions & Answers Engine to ask questions answer people's questions & connect with other people.
Mustafa
মেইজি যুগের অন্যতম উল্লেখযােগ্য কৃতিত্ব ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দের একটি নতুন সংবিধান রচনা, যে সংবিধান সাধারণভাবে মেইজি সংবিধান নামে পরিচিত। ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে Charter Oath প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে জাপানে উদারপন্থী আন্দোলন দেখা দিলে ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দের ১১ ই অক্টোবর সম্রাট মুৎসিহিত ঘােষণা করেন যে ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে মধ্যে একটি জাতীয় বিধানসভা প্রতিষ্ঠিত হবে। তবে তার পূর্বে ইতাে হিরােবুমি (Ito Hirobumi) ও অপর কয়েকজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি পাশ্চাত্য দেশগুলাে পরিভ্রমণ করে সংবিধান রচনা সংক্রান্ত নানা তথ্য সংগ্রহ করে আনবেন বলে স্থির হয়। তবে এই সময় পাশ্চাত্য শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ জাপানের রাজনীতিবিদদের অনেকেই সংসদীয় গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়নের পক্ষে সমর্থন জানালেও জাপানের কিছু সংখ্যক রাজনীতিবিদ দেশীয় ঐতিহ্য অক্ষুন্ন রেখে প্রয়ােজনীয় পাশ্চাত্যের চিন্তাধারার সংমিশ্রণে নতুন সংবিধান রচনার পক্ষপাতী ছিলেন। এঁদের অন্যতম ছিলেন ইতাে হিরােবুমি। ইতাে হিরােবুমির ওপর সম্রাট এবং তার পরামর্শদাতাদেরও গভীর আস্থা ছিল। সুতরাং জাপানের নতুন সংবিধান প্রণয়নের রূপরেখা তৈরি করার দায়িত্ব তারা ইতাের ওপর অর্পণ করতে সমর্থ হন। ইতিমধ্যে ইতাে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বেলজিয়াম, ইংল্যান্ড ও জার্মানীর সংবিধানগুলাে ও তাদের কার্যকারিতা সম্পর্কে প্রয়ােজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দের অগাস্ট মাসে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে ইতাে হিরােবুমি ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে জেনারেল গ্রান্ট -এর সঙ্গে সংবিধান সম্পর্কে আলােচনা করে এবং তিনি ইতােকে জাপানের নিজস্ব চিন্তাধারার বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জাপানের নতুন সংবিধান প্রণয়নের পরামর্শ দেন। ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে ইতাে জার্মানীতে যান এবং বিসমার্ক কর্তৃক সংযুক্ত জার্মানীর সংবিধানের বৈশিষ্ট্য সমূহের দ্বারা তিনি বিশেষভাবে প্রভাবিত হন। বার্লিনে বসবাসকালেই তিনি জার্মানীর সংবিধানের ধাঁচে জাপানের সংবিধান রচনার সিদ্ধান্ত নেন।
সংবিধান প্রণয়নের জন্য ইতাে হিরােবুমি সর্বপ্রথম একটি ব্যুরাে (Bureau) স্থাপন করেন এবং এই সংস্থাটিকে ইম্পিরিয়াল হাউসহােল্ড দপ্তরের সঙ্গে যুক্ত করেন। তারপর এই দপ্তরে রুদ্ধদ্বার কক্ষে অতি সঙ্গোপনে সংবিধানের খসড়া প্রস্তুত হয়। এই খসড়া প্রস্তুতিতে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন ইতাে হিরােবুমি, ইনৌয়েকি, কামেকে কেনতেরাে, ইতি মিয়ােজি প্রমুখ নেতৃবর্গ। তবে উদারপন্থী কোন নেতাকে সংবিধান প্রস্তুতির ব্যাপারে অংশগ্রহণ করতে আহ্বান জানানাে হয়নি এবং সংবিধান প্রণয়নের সার্বিক দায়িত্ব দেওয়া হয় ইতাে হিরােবুমিকে। সংবিধান সংক্রান্ত বিষয়ে ইতাে হিরােবুমির নীতি ছিল :
(ক) সংবিধানটি সম্রাটের অবদান স্বরূপ গণ্য হবে এবং সংবিধানে সম্রাটের ক্ষমতা ও মর্যাদা অক্ষুন্ন থাকবে।
(খ) যে সব গােষ্ঠী সামন্ততন্ত্রের অবসানের আন্দোলনে বিশিষ্ট ভূমিকা গ্রহণ করেছে তাদের ক্ষমতা বজায় রাখার জন্য সংবিধানে বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে।
(গ) সংবিধানে দুই কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা গঠন করার ব্যবস্থা থাকবে। উচ্চকক্ষ গঠনের জন্য পাঁচ শ্রেণীর ‘নােবল’ (Nobles) -এর পদ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে ৫০৫ জন পীয়ার্স (Peers) সৃষ্টি করা হয় এবং এদের দ্বারা উচ্চকক্ষ গঠন করার ব্যবস্থা করা হয়। দেশের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পরিষদের নাম কাউন্সিল অফ মিনিস্টারস। এইভাবে প্রণীত সংবিধান ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দের ১১ ই ফেব্রুয়ারী সম্রাটের অনুমােদন লাভ করে এবং সমগ্র নীতি সম্রাটের অবদান হিসাবে সংবিধানটি সশ্রদ্ধ চিত্তে গ্রহণ করে।