সান ইয়াৎ সেনের রাজনৈতিক চিন্তাধারা কি ছিল?
Sign Up to our social questions and Answers Engine to ask questions, answer people's questions, and connect with other people.
Login to our social questions & Answers Engine to ask questions answer people's questions & connect with other people.
Mustafa
সান ইয়াৎ সেনের রাজনৈতিক চিন্তাধারার মধ্যে প্রধান ছিল তিনটি নীতি। এই তিনটি নীতির প্রথমটি ছিল জাতীয়তাবাদ। সান ইয়াৎ সেন বিশ্বাস করতেন যে সংস্কৃতিগত সাফল্যের ভিত্তির ওপর গঠিত চীনের ঐক্যের পরিবর্তে রাজনৈতিক ভাবধারার সাদৃশ্যের ওপর চীনের ঐক্যের ভিত্তি গঠিত হওয়া প্রয়ােজন। জাতীয়তাবাদের দৃঢ়বন্ধনের দ্বারা চীনের বিভিন্ন অঞ্চলকে তিনি একসূত্রে আবদ্ধ করার চেষ্টা করেন। তবে তিনি মনে করতেন যে সংস্কৃতিগত ঐক্যকে রাজনৈতিক ঐক্যে পরিণত করার প্রথম সােপান শক্তিশালী কেন্দ্রীয় শাসনতন্ত্র। সুতরাং বিদেশী বিরােধী মতবাদ অপেক্ষা সান ইয়াৎ সেনের চিন্তাধারার মধ্যে গ্রাম, গােষ্ঠী, উপজাতি ও আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনের পরিবর্তে রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য বৃদ্ধির চেষ্টা অধিকতর গুরুত্বলাভ করে। প্রকৃতপক্ষে জাতীয়তাবাদী চিন্তাধারা সৃষ্টির জন্য তিনি জাতীয়তাবােধের ওপর বেশি গুরুত্ব আরােপ করেন। চীনের রাজনৈতিক অখণ্ডতার ওপর আঘাতকারী বিদেশীদের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করাই ছিল জাতীয়তাবাদ সৃষ্টির সহজতম পন্থা। তিনি চীন দেশকে একটি হাইপাে-কলােনি (hypo-colony) অর্থাৎ কলােনি অপেক্ষাও নীচু স্তরের স্থান বলে বর্ণনা করেন এবং বিদেশী সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তােলার ব্যবস্থা করেন। সাম্রাজ্যবাদী বিরােধী আন্দোলনই ছিল তার জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মূল ভিত্তি।
সান ইয়াৎ সেনের দ্বিতীয় নীতি ছিল গণতন্ত্র। তবে সান ইয়াৎ সেনের গণতান্ত্রিক ধ্যান ধারণা ধীরে ধীরে বিবর্তনের ফলে একটি নতুন আদর্শে পরিণত হয়। ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সান ইয়াৎ সেন রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস সরকার এবং জনসাধারণের কর্তৃত্ব রক্ষার জন্য উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের নির্বাচন ও পদচ্যুত করার ক্ষমতা জনসাধারণের ওপর ন্যস্ত করার পক্ষপাতী ছিলেন। তিনি গণভােট ও জনসাধারণের ওপর উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষমতার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি জনসাধারণের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সরকারকে আইন প্রণয়ন, প্রশাসন, বিচার ব্যবস্থা পরিচালনা, সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ এবং সংশােধন ও অনুমােদন এই পাচটি শাখার ওপর প্রতিষ্ঠিত করতে চেষ্টা করেন। শেষােক্ত নীতি দুটি চীনে বহুদিন প্রচলিত ছিল, সান ইয়াৎ সেন আবার নতুন করে তা অনুমােদন প্রবর্তন করতে চেষ্টা করেন। তবে সান ইয়াৎ সেন ক্ষমতা সবসময় উন্নতমানের ব্যক্তিদের ওপর ন্যস্ত করার পক্ষপাতী ছিলেন। কিন্তু সাধারণ লােকের স্বার্থের দিতে দৃষ্টি রেখে তাদের শাসনকার্য পরিচালনা করার জন্য তিনি অনুরােধ করেন।
তৃতীয় নীতিতে জনসাধারণের জীবিকা নির্বাহের কথা সান ইয়াৎ সেন উল্লেখ করেন। ক্ষমতা লাভের পর কিভাবে এই ক্ষমতা প্রয়ােগ করা হবে এই নীতিতে তা ব্যাখ্যা করা হয়। সাধারণভাবে বলা যায় যে, সান ইয়াৎ সেন তার কর্মসূচী অর্থনৈতিক ব্যাখ্যা অপেক্ষা সামাজিক ব্যাখ্যার ওপর অধিকতর নির্ভরশীল। তিনি রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপের সাহায্যে জমির মালিকানার মাধ্যমে সমতা স্থাপনের পক্ষপাতী ছিলেন। তবে এই কর্মসূচী কার্যকরী করার জন্য তিনি কোন নির্দিষ্ট নীতির কথা উল্লেখ করেননি।