মেইজি যুগের অর্থনৈতিক উন্নতির ব্যাপারে Entrepreneur ভূমিকা কি ছিল?
Sign Up to our social questions and Answers Engine to ask questions, answer people's questions, and connect with other people.
Login to our social questions & Answers Engine to ask questions answer people's questions & connect with other people.
Sahamina
মেইজি সরকারের নতুন অর্থনীতিকে সাফল্যমণ্ডিত করে তােলার জন্য শিল্প, বাণিজ্য ও ব্যাঙ্কের কারবারে ব্যুৎপত্তিসম্পন্ন ব্যবসায়ীরা দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় জাপানের অর্থনৈতিক উন্নতিসাধনে আত্মনিয়ােগ করে। এইরূপ ব্যবসায়ীদের মােটামুটিভাবে তিনভাগে ভাগ করা যায় — শহরবাসী বণিক, সামুরাই ব্যবসায়ী এবং কৃষক সম্প্রদায়। সাধারণভাবে এই তিনটি শ্রেণী Enterprenur বা শিল্প-উদ্যোক্ত নামে পরিচিত। মেইজি যুগে শিল্প ও বাণিজ্য, বাণিজ্য ও ব্যাঙ্কের সংগঠনে কাজে ও উন্নতি সাধনে Enterprenur শ্রেণী ব্যবসা-বাণিজ্যে অনুরাগ ও নিপুণতার স্বাক্ষর বহন করে। টোকুগাওয়া সােগানদের আমলের শেষের দিকে বিনিময়ের মাধ্যম হিসাবে চালের পরিবর্তে মুদ্রার প্রচলন এবং শহরাঞ্চলের উত্থান এই উভয় কারণেই বণিকশ্রেণী জাপানে প্রাধান্য লাভ করে। পূর্বে বণিকশ্রেণী কৃষিপণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ইয়েন বিনিয়ােগ করত। কিন্তু মেইজি যুগের অভ্যুদয়ে বণিকরা শিল্পোন্নতিতে মূলধন বিনিয়ােগ অধিকতর লাভজনক মনে করতে শুরু করে। বিনিময়ের ক্ষেত্রে রৌপ্য ও স্বর্ণপিণ্ডের প্রচলন তখন জাপানের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করায় জমি অপেক্ষা শিল্পে মূলধন বিনিয়ােগ অধিকতর লাভজনক হয়ে দাঁড়ায়। ফলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সমস্ত শ্রেণীর তুলনায় বণিক শ্রেণীর প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সময় কিয়ােটো, এডাে, ইয়ােকোহামা, কোবে, নাগাসাকি, ওসাকা প্রভৃতি শহরগুলাে জাপানের প্রধান প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্রে পরিণত হয়। ওসাকা তখন প্রকৃতপক্ষে বণিকের শহর বণিকের শহর আখ্যা লাভ করে। তবে জাপানের বণিকগণ পুঁথিগত জ্ঞান অপেক্ষা, মিতব্যয়িতা, বিবেচনার সঙ্গে হিসাবপত্র রক্ষণাবেক্ষণ এবং বৈষয়িক বাস্তব জ্ঞানের ওপর অধিকতর গুরুত্ব আরােপ করত।
তবে প্রথম দিকে জাপানের বণিকগণ অন্তর্দেশীয় বাণিজ্য সম্পর্কে বিশেষভাবে উৎসাহিত ছিল, মূলধনের অভাবের জন্য তাদের পক্ষে বৈদেশিক বাণিজ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু পরবর্তীকালে আধুনিক বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পর্কে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জন করে বণিকগণ বৈদেশিক বাণিজ্যে অংশগ্রহণ করতে শুরু করে। এই ব্যাপারে পথ প্রদর্শকের কাজ করে ওসাকার বণিকগণ। অন্তর্দেশীয় ও বহির্বাণিজ্যে সাফল্যলাভ করার প্রধান অন্তরায় দূর করার উদ্দেশ্যে জাইবাৎসু নামে পরিচিত এইসব বণিকগণ ব্যাঙ্ক স্থাপন করে এবং ব্যাঙ্কিং ব্যবসায় তারা খুবই সাফল্যের পরিচয় দেয়।
ভারী শিল্প ও হালকা শিল্প গঠনে বণিক শ্রেণীর কৃতিত্ব জাপানের অর্থনীতিতে দৃঢ়ভিত্তিক ওপর প্রতিষ্ঠিত করতে সমর্থ হয়। প্রথম দিকে খনি শিল্প, জাহাজ শিল্প প্রভৃতির ওপর মেইজি সরকার একচেটিয়া অধিকার স্থাপন করলেও পরে জাইবাৎসু গােষ্ঠীকে এই সব শিল্প সংগঠনের সুযােগ মঞ্জুর করা হয়। কয়লা শিল্প, বয়ন শিল্প, খনিজ তৈল শিল্প প্রভৃতির উন্নতি সাধনেও জাইবাৎসু বণিক গােষ্ঠীর দান খুবই স্মরণীয়।