ভারতীয় বিচার ব্যবস্থায় লােক আদালতের ভূমিকা কি?
Sign Up to our social questions and Answers Engine to ask questions, answer people's questions, and connect with other people.
Login to our social questions & Answers Engine to ask questions answer people's questions & connect with other people.
Sujata Shukla
বর্তমান ভারতের বিচারব্যবস্থা বৃটিশ ভারতের উত্তরসূরী। পুরনাে ব্যবস্থা জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় রায় প্রদানে বিলম্ব হচ্ছে এবং একই সঙ্গে বিচারব্যবস্থা ব্যয়সাপেক্ষ হয়ে পড়ছে। দরিদ্র মানুষ সুবিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এই সকল সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে বিচার ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে ১৯৮৫ সালের আগস্ট মাসে দিল্লীতে একটি সর্বভারতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে বিভিন্ন বিষয়ে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষ করে দরিদ্রদের জন্য সুবিচারের স্বার্থে জাতীয় আইনগত সাহায্য আইন (National Legal Services Act) প্রণীত হওয়ার কথা বলা হয়। একই সঙ্গে গ্রামাঞ্চলের জন্য ভ্রাম্যমান আদালত ও গণ আদালত গঠন করার প্রস্তাব নেওয়া হয়। ১৯৮৬ সালে ভারত সরকার এক ঘােষণার মাধ্যমে বিচার ব্যবস্থার পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে বিষয়টি বিচারপতি D. Desai এর নেতৃত্বে আইন কমিশনের হাতে ন্যস্ত করে।
বিচারপতি P. N. Bhagabati লােক আদালত গঠন করার প্রস্তাব করেন। তিনি সুপারিশ করেন যে, এই আদালত দাম্পত্য জীবনের বিরােধ, বিষয় সম্পত্তির বিরােধ এবং পথদুর্ঘটনা সম্পর্কিত বিরােধের মীমাংসা করবে। এই আদালত গঠনের উদ্দেশ্য হল সহজ উপায়ে এবং দ্রুত বিরােধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা। লােক আদালতের বিচার সময়সাপেক্ষ বা ব্যয়সাপেক্ষ নয়। সাধারণ ও দরিদ্র ব্যক্তিরা এই ব্যবস্থার মাধ্যমে ন্যায়বিচার পেতে পারেন।
লােক আদালত ধরনের বিচার ব্যবস্থার প্রসার ঘটলে সকল স্তরের প্রাতিষ্ঠানিক আদালতের কার্যভার লাঘব হবে। ভারতের মতাে উন্নয়নশীল দেশের এই ধরনের নিখরচায় আইনের সাহায্য লাভের জন্য দরিদ্র মানুষের স্বার্থে আনুষ্ঠানিকতাহীন বিচার ব্যবস্থার গুরুত্ব অপরিসীম। দিল্লীতেই এই আদালত প্রথম গঠিত হয়। All India Legal Aid and Advice Board এর দিল্লী শাখা লােক আদালত গঠন করে। প্রথম দিনেই পাঁচটি আদালত বসে। প্রতিটি আদালত গঠিত হয় অবসরপ্রাপ্ত দু’জন বিচারপতিকে নিয়ে। সহজ পদ্ধতিতে ও সর্বসমক্ষে বিচারকার্য পরিচালিত হয়। এই আদালত সমাজবিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ প্রভৃতি ব্যক্তিত্বদের নিয়েও গঠন করা যাবে। বর্তমানে উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, তামিলনাড়ু এবং পশ্চিমবঙ্গে লােক আদালত তার কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।